বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এক মেগাওয়াটও বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ৪৭ শতাংশ থেকে ৯৪ শতাংশ জনগণকে বিদ্যুত সুবিধার আওতায় এনেছে। আগামী জুনে শতভাগ জনগণ বিদ্যুত সুবিধার আওতায় আসবে। দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ৩ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট থেকে ২১ হাজার মেগাওয়াটে পৌছেছে। আর গ্যাসে প্রতিবছর সরকার ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের আগেও দেশে গ্যাস ছিলো। কিন্তু কোন পরিকল্পনা ছিলো না। এখন বিদ্যুত ও গ্যাসের মাষ্টার প্লান তৈরি করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজধানীতে বিদ্যুতের ভোল্টেজ উঠানামা করে না। বরং অতিরিক্ত বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে দেশের সর্বত্র নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিএনপি দলীয় অপর সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার সবার জন্য বিদ্যুত সুবিধা ও ভবিষ্যতে বিদ্যুতের চাহিদার কথা বিবেচনা করে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে ৮৭টি নতুন কেন্দ্র হতে ৩৯ হাজার ৮৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংসদে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গ্রীষ্মকালীণ সময়ে দৈনিক বিদ্যুতের গড় চাহিদা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট হতে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বর্তমানে মোট স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। উক্ত উৎপাদন ক্ষমতার বিপরীতে দেশের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত উৎপাদিত হচ্ছে।
বিভিন্ন মেয়াদে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে মোট ১৫ হাজার ৯৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। এ বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ২০১৯ হতে ২০২৭ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এছাড়া ৩ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৪টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি সাক্ষর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ২০২১ হতে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে।
তিনি আরও জানান, এক হাজার ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো ২০২১ সাল হতে ২০২৪ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালু হবে। এছাড়াও ১৯ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৭টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। এনিয়ে মোট ৮৭টি কেন্দ্র হতে ৩৯ হাজার ৮৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়া যাবে। এছাড়াও আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারত হতে ২ হাজার ৮৩৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত আমদানি কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। যা ২০২২ সালের মধ্যে চালু হবে। বর্তমানে (২০১৮-১৯ অর্থ বছরে) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের গড় উৎপাদন ব্যয় ৬ দশমিক ০১ টাকা।
Be the first to comment on "বিএনপি-জামায়াত জোট এক মেগাওয়াটও বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারেনি : প্রতিমন্ত্রী"