ঢাকা : মেয়েদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সকল স্কুলে উপবৃত্তির সঙ্গে মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য ফ্রি স্যানেটারি ন্যাপকিন সরবরাহের প্রস্তাব করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি। রবিবার রাজধানীর ফার্মগেটে আজিমুর রহমান অডিটোরিয়ামে ‘মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে নীতিসমূহ পযালোচনা ও স্কুল পর্যায় ওয়াশ সুবিধা উন্নতকরণে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব করেন।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (এমএইচএম) প্লাটফরম আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক আ ক ম মহিউল ইসলাম। মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন গবেষক মনজুম নাহার। আলোচনায় আরো অংশ নেন ইউএনএফপিএ’র ড. রাহাত আরা নূর, প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. হালিদা হানুম আক্তার, কেয়ার-এর ড. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার, ইউনিসেফ’র ইকবাল হোসাইন, ইউএনএইডস’র ড. সাইমা খান, পরিবার পরিকল্পনা সমিতির তানভীর আহমেদ, ডরপ-এর দিদার উদ্দিন, বিএনপিএস’র শাহনাজ সুমী, স্কুলছাত্রী নাবিলা ফরিদা রহমান প্রমূখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আ ক ম মহিউল ইসলাম বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এ বিষয়ে এরইমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো ৯৫ ভাগ নারী অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে মাসিককালীন সময় পার করেন। ফলে তাঁরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন। এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। বিশেষ করে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার ব্যয় বহুল। তাদের মধ্যে সচেতনতা ও সুশিক্ষার অভাবও রয়েছে। তাই ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
যুগ্ম সচিব শেখ মোমেনা মনি বলেন, সামাজিক নিয়মবিধি, বিশ্বাস বা রীতিনীতি এবং প্রচলিত ধ্যান-ধারণা মাসিকের সময় নারী ও মেয়েদের সামাজিক, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকে সীমিত করে তোলাসহ নারীর সামগ্রিক ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে নারীরা তাদের মাসিকের সময় শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে
মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, ‘মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা স্বাস্থ্য অধিকারের একটি অংশ। সেইসঙ্গে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু পরিষ্কার পানি, উপযুক্ত স্যানিটেশন সুবিধা এবং আনুষঙ্গিক স্বাস্থ্যবান্ধব সুযোগ সুবিধায় সীমিত প্রবেশাধিকার নারীদের জন্য তাদের মাসিক স্বাস্থ্যের ব্যবস্থাপনাকে কঠিন করে তোলে। তাই এ সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত ও মাসিকের সময় অনুকূল সেবামূলক পরিবেশ তৈরি করার জন্য ওয়াশ ব্যবস্থার জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
ড. রাহাত আরা নূর বলেন, পিরিয়ড বা মাসিক একটি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আমরা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছি না। বরং আতঙ্কে থাকি। কেউ যদি দেখে বা জেনে ফেলে। তিনি বলেন, এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। এ বিষয়ে ছোটবেলা থেকে মেয়েদের ধারণা দিতে হবে। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।
স্কুলছাত্রী নাবিলা ফরিদা রহমান বলেন, মাসিক ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় মাসিকের সময় দেশের অনেক কিশোরী স্কুলে যায় না, এমনকি পরীক্ষায়ও অংশ নেয় না। দেশের বেশিরভাগ স্কুল-কলেজের টয়লেট মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উপযোগী নয়। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯
Be the first to comment on "মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য স্কুলে উপবৃত্তির সঙ্গে ফ্রি স্যানেটারি ন্যাপকিন সরবরাহের প্রস্তাব"