ঢাকা : ইউনাইট ফর বডি রাইটস্ (ইউবিআর) বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স আয়োজিত অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যেমন সততা কর্নার তৈরি করেছে, তেমনি প্রতিটি স্কুলে কিশোর-কিশোরী কর্নার করার প্রস্তাব করেন। যেখান থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে যেকোনো তথ্য ও সহযোগিতা নিতে পারে। সভায় বক্তারা বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নসহ অনেক বিষয় জড়িত। তাই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বার্থে কিশোর-কিশোরীদের জন্য এ বিষয়ে সঠিক তথ্য ও শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসূচিতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি যুক্ত করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কৈশোর যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য এবং অধিকার শিক্ষার গুরুত্ব, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন পপুলেশন সাইন্স অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি)’র নির্বাহী পরিচালক ড. নূর মোহাম্মদ। সভায় বক্তৃতা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের প্রতিনিধি মাশফিকা জামান সাটিয়ার, টিসার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ কানিজ সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সালমা আক্তার, ইউবিআর বাংলাদেশ অ্যালায়েন্সের প্রধান কাজী সুরাইয়া সুলতানা, কেয়ার বাংলাদেশের লাভলী ইয়াসমিন জেবা, মেরী স্টোপস-এর মঞ্জুন নাহার, শিক্ষক প্রতিনিধি তৃপ্তি রানী রায় ও হাফিজ উদ্দিন প্রমূখ।
সভায় অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন শিক্ষক ও অবিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার তিনভাগের এক ভাগ কিশোর কিশোরী ও যুব। কৈশোর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতা নিশ্চিত করছে। তবে আমরা স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন ও বিকাশকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারি না। যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পাই। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ২০১২ সালে শিক্ষা কারিকুলামে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার বিষয়গুলো যুক্ত করা হলেও সে বিষয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা যথাযথ শিক্ষা পাচেছ না। ফলে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও সচেতন করে গড়ে তুলতে শিক্ষা কারিকুলাম যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরো গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ইউবিআর বাংলাদেশ অ্যালায়েন্সের প্রধান কাজী সুরাইয়া সুলতানা বলেন, সকলের সহযোগিতায় প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে অনেকটা এগিয়েছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের পরিবর্তন হয়েছে। ইউবিআর-এর কার্যক্রম সরকারের বয়সোপযোগী জীবন দক্ষতা, শিক্ষা গ্রহণ ও সহিংসতামুক্ত নিরাপদ পরিবেশ তৈরির কাজকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
তারা বলেন, কৈশোরে ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মতো তথ্য পাওয়া আমাদের দেশে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য না জানার কারণে জীবনে প্রথমবার ঋতুস্রাবের সময় অনেক কিশোরী ভয় পায়। ঋতুস্রাবের সময় স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাপনা না থাকায় নারী ও কিশোরী নানা সংক্রমণের শিকার হয়। সংক্রমণ দীর্ঘদিনের হলে প্রজনন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অনেকেই বন্ধ্যাত্বের শিকার হন।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯
Be the first to comment on "প্রতিটি স্কুলে কিশোর-কিশোরী কর্নার চাই"