সর্বশেষ

করোনাকালের বাজেট অধিবেশনকে ঘিরে কঠোর সতর্কতা

ঢাকা : করোনা পরিস্থিতির কারণে সংসদের বাজেট অধিবেশনকে সামনে রেখে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। অধিবেশনে স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ অনুসরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিবেশন চলাকালে পুরোটা সময় সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর অধিবেশনের আগে তাদের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে করোনাভাইরাস নেগেটিভ প্রমাণিত হতে হবে।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, সংসদ অধিবেশনে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে সংসদ সচিবালয়ের ৯৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে বাকিদেরও পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। সংসদ ভবনের মেডিক্যাল সেন্টারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই টেস্টে নেগেটিভ আসা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অধিবেশনে দায়িত্ব পালন করবেন। আর তারা যাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে না যেতে পারে সে জন্যেই তাদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হবে।

সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঝুঁকি এড়াতে শারীরিকভাবে অসুস্থ ও বয়স্ক সংসদ সদস্যদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। রোস্টার করে তাঁদের অধিবেশনে যোগদান নিশ্চিত করা হবে। কোরাম পূর্ণ হওয়ার জন্য ৬০ জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে। তবে উপস্থিতি যাতে কোনভাবেই তিন অংকে না পৌঁছায় সেদিকে সতর্ক থাকা হবে।

অধিবেশন কক্ষের আসন বিন্যাসও আগের মতো থাকছে না। সংসদ নেতা তথা প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের বেশ কয়েকটি আসন ফাঁকা রাখা হবে। সংসদ সদস্যরা সকলেই পাশের আসন ফাঁকা রেখে বসবেন। অংশগ্রহণকারী সকলের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর সকলকে ডিসইনফেকশন চেম্বার দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। মূল ভবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা মেপে নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের স্বার্থে প্রতিবছরের মতো এবার বাজেট অধিবেশনে সকলের প্রবেশের সুযোগ থাকছে না। রোস্টার সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে অংশ নিবেন। অধিবেশনে দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন। এছাড়া নির্ধারিত সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী অধিবেশনে দায়িত্ব পালন করবেন। অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকছে না। অধিবেশন খুবই সংক্ষিপ্ত হবে। অধিবেশনে বাজেট সংক্রান্ত বিলের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিল পাসের সম্ভাবনা নেই।

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সংসদ সচিবালয়ের প্রস্তুতিতে কোনও ঘাটতি থাকছে না। করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়েই সংশ্লিষ্ট সকলে অধিবেশনে দায়িত্ব পালন করবেন। তারপরও যিনি ঝুঁকিপূর্ণ, তিনি অধিবেশনে যোগ দিবেন না বলে আমরা আশা করি।

উল্লেখ্য, আগামী ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। এর আগে ১০ জুন বিকেল ৫টায় চলতি সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশন শুরু হবে। ওই দিন বিকেল ৪টায় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ও কর্মসূচী চূড়ান্ত হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের অধিবেশন খুবই সংক্ষিপ্ত হবে। যা ৭ থেকে ১০ দিন চলতে পারে। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সংসদের সপ্তম অধিবেশন একদিনের জন্য বসেছিলো। নিয়মরক্ষার ওই অধিবেশনটি সোয়া ঘণ্টায় শেষ হয়। কিন্তু বাজেট অধিবেশনে তেমনটি করার সুযোগ নেই। কারণ প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা শেষে ৩০ জুন তা পাসের রেওয়াজ রয়েছে।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ৫ জুন ২০২০ ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "করোনাকালের বাজেট অধিবেশনকে ঘিরে কঠোর সতর্কতা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*