ঢাকা : আদিবাসীসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বিদ্যমান সংকট নিরসনে বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন নারীবাদি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার ‘কোভিড-১৯’ মহামারিতে আদিবাসী নারীর জীবন-জীবিকা : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভায় এই দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমির সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আদিাবসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা। আলোচনায় অংশ নেন সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্চীব দ্রং, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফৌওজিয়া মোসলেম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যারয়ের শিক্ষক ড. আইনুন নাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন কনা, টিআইবি’র ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য সুস্মিতা চাকমা, অধিকার কর্মী ফ্লোরা বাবলী তালাং, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা প্রমূখ।
সভায় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, এই করোনার দুঃসময়ে আদিবাসীসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরা ত্রাণ পাচ্ছে না। সরকারী ত্রাণ থেকে তাদের কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আদিবাসীদের ভাগ্য উন্নয়নে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সঞ্জীব দ্রং বলেন, এই করোনা আদিবাসীদের আরোবেশি প্রান্তিকতায় ঠেলে দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে আরো বেশি সচেষ্ট হতে হবে, যাতে সরকারী অনুদান থেকে আদিবাসীরা বাদ না পড়ে।
জোবাইদা নাসরিন কণা বলেন, অনলাইন শিক্ষা গ্রহনের ক্ষেত্রে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটু ঝুঁকি থেকে যায় কেননা এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা সবসময় নজরদারির মধ্যে থাকে।
ড. আইনুন নাহার বলেন, এই মহামারীর সময় ত্রাণ দেওয়ার কাজে আদিবাসীদের অংশীদারিত্ব ও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আদিবাসী নারী পুরুষদের অংশগ্রহণ জরুরী।
সুস্মিতা চাকমা বলেন, সরকারের যে অনুদান তা স্বচ্ছতার অভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় সেই ত্রাণ পৌঁছছে না। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্গমতার কারণে স্বাস্থ্যসেবাথেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
ফ্লোরা বাবলী তালাং বলেন আদিবাসীদের প্রথাগত লকডাউন পদ্ধতির কারণে করোনা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিশেষ করে গর্ভবতী বা প্রসুতি মা বঞ্চিত হয়েছেন।
ফৌজিয়া মোসলেম বলেন, করোনার এই সময় সাধারন মানুষেরই স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হয়েছে সেখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীরা বিশেষ করে নারীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এজন্য সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শাহনাজ সুমি বলেন, আদিবাসীদের প্রথাগত লকডাউন পদ্ধতির কারণে করোনা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু সরকারের যে অনুদান তা স্বচ্ছতার অভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় সেই ত্রাণ পৌঁছছে না। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্গমতার কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে গর্ভবতী বা প্রসুতি মা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়ন, আদিবাসীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় এককালীন আর্থিক প্রণোদনা প্রদান, ভূমি কমিশন আইন দ্রুত কার্যকর, সমতল অঞ্চলের আদিবাসদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয়সহ অবিলম্বের ভূমি কমিশন গঠন, আদিবাসী নারীসহ সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং নারী উন্নয়ন নীতিমালায় আদিবাসী নারীদের জন্য আলাদা একটা অধ্যায় রাখার সুপারিশ করা হয়।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ১৪ আগষ্ট ২০২০২ ইং
Be the first to comment on "অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে সংকট নিরসনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণের দাবি"