সর্বশেষ

ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান

ঢাকা : অনলাইনে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল পিপলস অ্যাসেম্বলিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠী জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও লিঙ্গ নির্বিশেষে বৈষম্যের শিকার। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি জনগণকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

সোমবার বিকেলে ‘বর্তমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর প্রভাব’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ওই অ্যাসেম্বলির আয়োজন করে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস), জনউদ্যোগ ও ইনসিডিন বাংলাদেশ। সাউথ এশিয়া অ্যালান্স ফর প্রভার্টি ইরাডিকেশনের (স্যাপি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সঞ্চালনায় ওই অ্যাসেম্বলীতে ‘করোনাকালীন বৈষম্য ও অসমতা’ বিষয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অক্সফামের এস এম মঞ্জুর রশিদ।

আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)’র সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক ডা. মুশতাক হোসেন, শ্রমিক নেতা মাহবুব মজনু, শিশু সংগঠক ডা. লেলিন চৌধুরী, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আইইডি’র নির্বাহী পরিচালক নূমান আহম্মেদ খান, ইনসিডিন-এর পরিচালক মুশতাক আলী, নারীনেত্রী জাকিয়া হাসান প্রমুখ।

অ্যাসেম্বলিতে রোকেয়া কবীর বলেন, করোনাভাইরাস মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের জীবন যাপনের ওপরে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাতে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি দরিদ্র জনগোষ্ঠির জীবন সংগ্রামকে কঠিন করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি নারীদের জন্যে ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, করোনা পরিস্থিতিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। করোনা জীবন জীবিকা ও প্রজনন স্বাস্থ্যের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিতসহ খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।

মূল বক্তব্যে এস এম মঞ্জুর রশিদ বলেন, দেশের জনগণের গড় আয় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। হতদরিদ্র্য পরিবারের সদস্যদের কোন প্রকার সহায়তা ছাড়াই জোরপূর্বক ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। যা জন-জীবণে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।

তিনি আরো বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও বৈষম্য কমাতে কমপক্ষে আগামী দুই বছরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কৌশল নিরূপণ, বাজার ও সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের দিক নির্দেশনায় কার্যক্রম ও নীতি নির্ধারণ নিশ্চিত করতে সরকারের পদক্ষেপ নিতে হবে।

অ্যাসেম্বলিতে ধনী-দরিদ্রদের মধ্যকার ব্যবধান কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, মজুরী ও নারীর প্রতি বৈষম্য কমানো, দেশীয় কর রাজস্ব সচল, ধনী ব্যক্তি ও কম্পানির প্রতি অন্যায্য কর ছাড় বন্ধ এবং জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে নারী ও ক্ষুদ্র কৃষকের ক্ষমতায়ন, নারী ও ক্ষুদ্র কৃষককে রক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ৫ অক্টোবর ২০২০ ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*