ঢাকা: বাঙালি যখনই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েছে, তখনই এসেছে চরম আঘাত। তাই, সংবিধানের চারটি মৌলিক স্তম্ভ- জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল তাঁর দর্শন। বঙ্গবন্ধুর এই দর্শনের কথা উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, বাংলার মানুষকে পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করে শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সমাজ ও অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক মুক্তি দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত যে আন্দোলন-সংগ্রাম, সেই আদর্শ-চিন্তা-দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে আমাদের সংবিধানে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংবিধানের এই মূল ভিত্তিগুলোকে সামনে রেখেই একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আজ ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ৪৯তম দিবস উপলক্ষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইটি বিভাগ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ৭২ এর সংবিধান শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খন্দকার আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই আহ্বান জানান স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, এ্যাডভোকেট দীপক ঘোষ, এ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান সিকদার, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রকাশ রায়, হাসনাত ফারুক শিমুল রবিন, এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু, সমাজকর্মী সুচরিতা দেব। এছাড়াও এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিগণ ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এ্যাডভোকেট আজহারুল্লাহ ভূইয়া।
স্পিকার আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সংবিধানের চারটি মৌলিক স্তম্ভের আলোকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন শোষণহীন সমাজ নির্মাণ করতে পারে। ‘সংবিধান’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গভীর অনুভূতির ফসল। এই সংবিধানের সঠিক প্রতিফলন ঘটাতে সংবিধানে অনুসৃত বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দর্শনের আলোকে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সকলকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মাধ্যমে সংবিধানের সুফল বঞ্চিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেই এই সংবিধান সকলের কাছে অর্থবহ হবে বলে উল্লেখ করেন স্পিকার।
বক্তারা বলেন, ১২ অক্টোবর ১৯৭২ গণপরিষদে এবং ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সংবিধান প্রণয়নের দিনে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ভাষণ দুটোতে সমগ্র সংবিধান প্রণয়নের কাঠামো ও প্রেক্ষাপটের পরিপূর্ণ প্রতিফলন রয়েছে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরের দিন ১১ জানুয়ারি ১৯৭২ ‘প্রভিশনাল কনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ অর্ডার ১৯৭২’ প্রণয়ন করেন। যেখানে গণপরিষদকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। পরবর্তীতে, ৪ নভেম্বর ১৯৭২ গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেন যা ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে কার্যকর হয়। সভায় বক্তারা আরও বলেন, ১৯৭২ এর সংবিধানের মূল চার স্তম্ভের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমেই একটি দারিদ্র্যমুক্ত গণক্তান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ৪ নভেম্বর ২০২০ইং
Be the first to comment on "সংবিধানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে : স্পিকার"