আইনপ্রণেতা ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সিগারেট কম্পানিগুলো তরুণদের মাঝে ই-সিগারেটের ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কৌশলে ই-সিগারেটের প্রচারণা চালাচ্ছে। যা তরুণ প্রজন্মের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই তরুণ সমাজকে রক্ষায় এখনই ই-সিগারেট বন্ধ করা জরুরি। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। এরআগে প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি করে ই-সিগারেট বন্ধ করে দিতে হবে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা অফিসার্স ক্লাব মিলায়তনে ট্যোবাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রির্সাচ সেল (টিসিআরসি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তারা একথা বলেন।
‘তরুণদের নেশায় আসক্ত করতে নতুন হুমকি ই-সিগারেট : বন্ধের উপায়’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি।
বক্তৃতা করেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাবি মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু, সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশ, রানা মোহাম্মদ সোহেল, প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত, শিরিন আক্তার ও প্রফেসর মাসুদা রশিদ চৌধুরি এবং জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার এম এ মালেক ও গেন কোয়ান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। দেশে বিদেশ থেকে শতাধিক তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মী জুম সফটওয়ারের মাধ্যমে এই আলোচনা সভায় যুক্ত হন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অ্যাডভোকেট ফজলে রাবি মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তার আগেই আমরা তামাকমুক্ত হতে চাই। সেজন্যই ই-সিগারেটের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। সংসদীয় ককাস গঠন করে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে। তিনি ই সিগারেট আমদানি বন্ধে অর্থ আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু বলেন, ধূমপান মাদকের প্রবেশ দ্বার। আমাদের নতুন প্রজন্ম ই সিগারেট নামে ক্ষতিকর পণ্যে আসক্ত হয়ে পড়ার আগেই এর প্রসার রুখতে হবে। তাই প্রয়োজনে অধ্যাদেশ জারি করার জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু বলেন, ই-সিগারেট তরুণদের তামাক সেবনের উৎসাহ দেয়। সিগারেট -থেকে ই-সিগারেট নিরাপদ তা ভাবার কোন কারণ নেই। এটা তামাক কোম্পারী অপপ্রচার।
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুনাফার জন্য ভবিষ্যত প্রজন্মকে ঝুঁকিতে ফেলেছে ই-সিগারেট ব্যবসায়ীরা। ই-সিগারেটের ভয়াবতা থেকে তরুণদের রক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারির বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে তামাক কোম্পানীগুলো ইউটিউব, ফেসবুক, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এছাড়াও যারা ধুমপান ছাড়তে চায় তাদেরকে প্রচলিত সিগারেটের বদলে ই-সিগারেট ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। ই সিগারেটের প্রসার বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি।
মূলপ্রবন্ধে সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ই-সিগারেট নিয়ে স্পষ্ট কোন আইন না থাকায় দেশে ই-সিগারেট আমদানি ও বিক্রয় চলছে। সিগারেট কম্পানিগুলো ই-সিগারেট কম ক্ষতিকর বলে তরুণদের আকর্ষণ করছে। ইতিমধ্যে ই-সিগারেটের ভয়াবতা থেকে জনগণকে রক্ষার জন্য ভারতসহ বিশে^র ৪২টি দেশে এটা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৫৬টি দেশ ই-সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের উপর বাধ্য-বাধকতা আরোপ করেছে।
Be the first to comment on "অধ্যাদেশ জারি করে ই-সিগারেট বন্ধের আহ্বান"