সর্বশেষ

সংসদ ভবন জুড়ে উৎসবের আমেজ , বঙ্গবন্ধুর উপর রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতা

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ-২০২০) উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। অধিবেশনেকে উপলক্ষ্য করে পুরো সংসদ ভবনে চলছে উৎসবের আমেজ। এরমধ্যেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্মারক বক্তৃতা করেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনেই চলছে সকল কার্যক্রম।

আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশন কক্ষে আসন গ্রহন করেই উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান তিনি। এসময় স্পিকার বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই সংসদের এই বিশেষ অধিবেশন। এসময় তিনি কবি শামসুর রাহমানের ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতার অংশ বিশেষ, ‘ধন্য সেই পুরুষ, নদীর সাঁতার পানি থেকে যে উঠে আসে/ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে;—- জীবিতের চেয়েও অধিক জীবিত তুমি।’ উদ্ধৃতির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেন।
পূর্ব নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ করোনা নেগেটিভ সংসদ সদস্যরা অধিবেশন কক্ষে আসন গ্রহণ করেন। তবে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ সিনিয়র কয়েকজন সংসদ সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারী দলের সদস্যরা অধিকাংশ সদস্য কালো মুজিব কোর্ট পরে অধিবেশনে প্রবেশ করেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ৬টা ৭ মিনিটে সংসদ কক্ষে প্রবেশকালে বিউগলে রাষ্ট্রপতির আগমনি অর্কেস্ট্রা বেজে ওঠে। এরপর প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যসহ অধিবেশন কক্ষে থাকা সবাই দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানান। এরপর স্পিকারের ডান পাশে রাখা আসন গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর দেওয়া দুর্লভ ঐতিহাসিক ভাষণ সংসদ কক্ষে দেখানো হয়। তখন পুরো অধিবেশনে নেমে আসে পিনপতন নিরাবতা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ চলাকালে মুহুর্মূহু করতালি দিয়ে অভিবাদন জানান এমপিরা। বঙ্গবন্ধুর সেই আবেগঘন ভাষণ শুনে চোখমুছতে দেখা যায় তাঁর প্রাণপ্রিয় কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেককেই। ভাষণ শেষ হওয়ার সাথে সাথে ‘জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দেন সংসদ সদস্যরা।
এরপর ৬টা ৩৪ মিনিটে স্পিকারের বাম পাশে রাখা ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় করোতালির মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানান এমপিরা। রাষ্ট্রপতি গণপরিষদ ও দেশের প্রথম সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে আইনসভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে দেখেছেন। বক্তৃতায় তার প্রতিফলন পাওয়া যায়। ভাষণ শেষে রাষ্ট্রপতিকে সংসদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থসমূহ উপহার দেন স্পিকার। পরে অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি। অধিবেশন ১৫ মিনিটের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির সময়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরতি শেষে বঙ্গবন্ধু’র কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর আলোচনার জন্য ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন গোপালগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য (সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা। ওই প্রস্তাবটি নিয়ে সংসদে আলোচনা করবেন সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা। টানা চার দিন আলোচনা শেষে আগামী বৃহস্পতিবার প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে গ্রহণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে (মুজিববর্ষ-২০২০) স্মরণীয় করে রাখতে গত রবিবার থেকে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে। অধিবেশনকে ঘিরে সংসদ ভবন এলাকা ছিলো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন সংসদ সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরা। অধিবেশন উপলক্ষে সংসদ ভবনকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ৯ নভেম্বর ২০২০ ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "সংসদ ভবন জুড়ে উৎসবের আমেজ , বঙ্গবন্ধুর উপর রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*