ঢাকা : বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘সুশীলন’-এর ৩০বছর পূর্তি উৎসবে যুক্ত হয়েছিলেন সারাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। তারা ৩০বছরের অর্জনের প্রশংসা করে বলেছেন, মহামারি করোনাকালেও সুশীলন মানুয়ের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সাধ্যমত সেবা প্রদান থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটেনি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে গত ৩০ বছরে যথেষ্ঠ দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে সুশীলন। সংগঠনটি আগামী দিনগুলিতেও মানুষের পাশে থেকে সর্বদা সেবা দিয়ে যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
আজ সোমবার এক মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে এই আশা প্রকাশ করেন তারা। তারা বলেন, উপকূলের জীবন-জীবিকা সুরক্ষায় সরকারী বেসরকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের আরো বেশী দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। কারণ উপকূলের বহু জনপদ আজো অবহেলিত। এরপর দূর্যোগের ঝুঁকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তাই দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে উপকূলের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে জনগণের আস্থা অর্জনকারী সংস্থা সুশীলন কার্যকর উদ্যোগ নিবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
সুশীলনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ জ ম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন সুশীলনের নির্বাহী প্রধান মোস্তফা নুরুজ্জামান। ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে সভায় গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ঢাকা থেকে নিখিল ভদ্র ও সাকিলা পারভীন, খুলনা থেকে গৌরাঙ্গ নন্দী, কক্সবাজার থেকে মো. মুজিবুল ইসলাম, সাতক্ষীরা থেকে কল্যাণ ব্যানার্জি, আবুল কালাম আজাদ, এম কামরুজ্জামান ও শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, বাগেরহাট থেকে নাকির সিরাজুল হক, বাবুল সরদার ও আজাদুল হক, বরগুনা থেকে চিত্ত রঞ্জন শীল ও জাকির হোসেন সিরাজ, পটুয়াখালী থেকে জালাল আহমেদ প্রমূখ।
সূচনা বক্তব্যে সুশীলনের দীর্ঘ সংগ্রাম ও অর্জন তুলে ধরেন মোস্তফা নূরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সুশীলন’ ১৯৯১ সাল থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এই কাজ শুরু হলেও সবার পিছে ও সবার নিচে পড়ে থাকা মানুষের উন্নয়নে সারাদেশে এখন সুশীলনের প্রায় ২০০০ হাজার কর্মী কর্মরত আছে। গত ৩০ বছরে দূর্যোগ মোকাবেলায় তাদের বড়ধরণের ভূমিকা রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চল তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হত দরিদ্র মানুষের জীবন মান উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে সুশীলন। গত ২০১৭ সাল থেকে সুশীলন রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং হোস্ট কমিউনিটির মানুষের জীবন মান উন্নয়নে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরো বলেন, সংগঠনটি ৬৪টি জেলায় ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতায় ৩৯৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় এক কোটি পরিবারকে সহযোগীতা করেছে। যার মধ্যে ১০ লক্ষ পরিবারকে দুর্যোগকালীণ সহযোগিতা দিয়েছে। বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে সুশীলন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও বাঙ্গালী সংস্কৃতির বিস্তারের সুশীলন জন্মলগ্ন থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিক প্রতিনিধিরা প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠির উন্নয়নে সুশীলনের মতো অন্যান্য সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সারাদেশে যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে, তা থেকে উপকূলীয় এলাকা অনেকটা বঞ্চিত। এরপর প্রতিনিয়ত ঝড়-জলোচ্ছাসসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ জীবন-জীবিকাকে চরম সংকটের মুখে ফেলেছে। এই সংকট মোকাবেলায় সরকার ও দাতাসংস্থাগুলোর দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নতুন প্রকল্প গ্রহণের পাশাপাশি জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্ধ প্রয়োজন।
সভায় উপকূলীয় অঞ্চলে সাংবাদিকতা করার ক্ষেত্রে নানান সীবাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা বলেন, উপকূলীয় ইস্যুগুলোকে নীতি-নির্ধারকদের দৃষ্টিতে আনতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ-কর্মশালার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এ জন্য তথ্য-ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে। উপকূলের সাংবাদিকদের উৎসাহিত করতে অ্যাওয়ার্ড চালুর প্রস্তাব করেন তারা।
উল্লেখ্য, ‘প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করি, নবচেতনায় সমাজ বিনির্মাণে অবদান রাখি’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৩০বছর পূর্তি উৎসব পালন করছে সুশীলন। এ উপলক্ষে গত ২রা নভেম্বর মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ২২ নভেম্বর ২০২১ ইং
Be the first to comment on "উন্নয়ন সংস্থা সুশীলন-এর ৩০বছরের অর্জনের প্রশংসায় সারাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা"