ঢাকা : বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা অভিবাসীদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, অভিবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে বড়ধরণের ভূমিকা রাখলেও তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেই। অথচ বিদেশে কর্মস্থলে নানা হয়রানি, বঞ্চনা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অভিবাসন কর্মীদের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আলাদা ও স্বাধীন সেল গঠনের সুপারিশ করেন তারা।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ’বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইনের আওতায় আর্বিট্রেশনের মাধ্যমে অভিবাসি কর্মীদের ন্যয় বিচারের সুযোগ’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, অভিবাসন ও উন্নয়ন সংক্রান্ত সংসদীয় ককাস এবং দেশি-বিদেশী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনডব্লিউএলএ’র সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলীর সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন বিএনডব্লিউএলএ’র পরিচালক নাফিজ ইমতিয়াজ হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সভায় বক্তৃতা করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম, সুইজারল্যাণ্ড দূতাবাসের প্রতিনিধি নাজিয়া হায়দার, সাবেক যুগ্ম সচিব কাজী আবুল কালাম, বিএনডব্লিউএলএ’র জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জোবাইদা পারভীন প্রমূখ।
সভায় ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, অভিবাসন কর্মীরা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অথচ জাতীয় বাজেটে তাদের জন্য বরাদ্দ খুবই সামান্য। উপরন্তু অবিবাসন কর্মীদের অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আলাদা ও স্বাধীন সেল নেই। হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার অভিবাসীদের অধিকাংশই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিএমইটি’তে আলাদা আর্বিট্রেশন সেল গঠন ও তা কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনে বাজেট রাখা, উপজেলা পর্যায়ে আর্বিট্রেশনের ব্যবস্থা চালু এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের সুপারিশ করেন তিনি।
অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল আলম বলেন, সরকার অভিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করছে। প্রতারণার শিকার রিক্রুটিং এজেন্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারপরও সংক্ষুব্ধ অভিবাসী কর্মীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিএমইটি’তে আলাদা ও দক্ষ আর্বিট্রেশন সেল গঠনের পাশাপাশি সেখানে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া জরুরি।
সুইজারল্যাণ্ড দূতাবাসের প্রতিনিধি নাজিয়া হায়দার বলেন, সুইজারল্যান্ড দূতাবাস বাংলাদেশে অভিবাসন উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে আসছে। বাংলাদেশ সরকার চাইলে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। প্রতিকার প্রাপ্তির জন্য বিএমইটি’র অধীনে সালিসের জন্য আলাদা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত লোকবল থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কাঙ্খিত সেবা প্রদান সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করনে তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সালমা আলী অভিবাসী কর্মীদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সরকারকে অভিবাসী কর্মীদের বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। প্রতারণার শিকার অভিবাসী কর্মীদের দ্রুত প্রতিকার প্রাপ্তি ও সৃষ্ট সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করতে হবে। এজেন্টদের পাশাপাশি সাব-এজেন্টদেরকে মনিটরিং-এর আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং
Be the first to comment on "জাতীয় স্বার্থে অভিবাসীদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে : বিএনডব্লিউএলএ"