ঢাকা : যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় এই আহ্বায় জানানো হয়। সভায় ১২দফা সুপারিশ তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
নাগরিক উদ্যোগ আয়োজিত ‘তরুণদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার’ বিষয়ক ওই মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জুবায়দা নাসরীন। নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রকল্প সমন্বয়কারী জয়িতা হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মুশফিকা জামান সাতিয়ার, অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অফ সেপ্টিক অ্যাবরশন, বাংলাদেশ (বাপসা)’র নির্বাহী পরিচালক ডা. আলতাফ হোসেন, ওমেন উইথ ডিজেবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শিরিন আক্তার, ‘অধিকার এখানে, এখনই’ প্রকল্পের ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর মো. মাসুদুর রহমান, নবদুত চেঞ্জমেকার নেহা আক্তার সিফাত ও সূচনা দাস নিতু, বাপসার প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীমা আক্তার চৌধুরী প্রমূখ।
সভায় নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মুশফিকা জামান বলেন, তরুণদের জীবনকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করাটা খুব জরুরি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সকলের অধিকার। এটা মানবাধিকার, যেটা প্রত্যেকেরই পাওয়া উচিত। মানবাধিকার নিশ্চিত করার স্বার্থে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, দুটো বিষয়েই বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনকে শক্ত ভাবে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. জুবায়দা নাসরীন বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে নারীদের সাথে আমরা অনেকটা কাজ করলেও বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরদের সাথে কাজ করার উদ্যোগ অনেক কম। যেকোনো উন্নয়নকাজেই চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, তবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একটু বেশি সংবেদনশীল। বয়ঃসন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ধারণা সবাইকে বুঝতে হবে। পরিবারের পর্যায় থেকে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
সভায় উত্থাপিত সুপারিশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর)’র সুপারিশগুলোর একটি যৌথ মিড টার্ম পর্যালোচনার আহ্বান জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, সুপারিশগুলো বিবেচনা করে পলিসি ও আইনি সংস্কারের জন্য অ্যাডভোকেসি করার অনুরোধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের জন্য যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
সুপারিশ বলা হয়, মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক একটি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার বিষয়ক থিমেটিক কমিটি গঠন করতে হবে। তরুণদের জন্য একটি মানবাধিকার হ্যান্ডবুক তৈরি এবং নীতিনির্ধারণে তরুণদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি নিষ্পত্তি কমিটি সক্রিয় করতে হবে। স্যানিটারি প্যাড ও স্বাস্থ্যবিধি পণ্য সম্পর্কিত অ্যাডকেসি করতে হবে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত শিক্ষামূলক প্রচারণা সম্প্রসারণ করতে হবে। আইনি সহায়তা ও মিডিয়েশন সেবার উন্নয়ন করতে হবে। এ খঅতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং
Be the first to comment on "প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়ক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ১২দফা সুপারিশ"