ঢাকা : স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন প্রথম শ্রেণির মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন পরিকল্পিত ভাবে ৫ বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসী নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা নিরসন ও পৌরসভার অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আজ সোমবার স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য সাকিলা পারভীন। আবেদনে বলা হয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণের প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত হলেও মোংলা পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের খবর নেই। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হওয়ায় ৫ বছরের জন্য নির্বাচিতরা অতিরিক্ত প্রায় ৫ বছর দায়িত্ব পালন করছেন। এতে পৌরসভার উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। একইসঙ্গে সেখানে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা চলছে। তাই মোংলা পৌর মেয়রকে অপসারণ করে অবিলম্বে প্রশাসক নিয়োগসহ দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় নাগরিক সচেতন সমাজ।
লিখিত আবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারী দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে মোংলা পোর্ট পৌরসভায় অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন মেয়র পদে মোংলা পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. জুলফিকার আলী মেয়র নির্বাচিত হন। কাউন্সিলর পদেও সংখ্যাগরিষ্টতা পায় বিএনপি-জামায়াত। তাদের মেয়াদ শেষে ২০১৬ সালে পৌরসভায় পুনরায় নির্বাচনের তফসীল ঘোষণার পূর্বে বর্তমান মেয়র তার নিজস্ব লোক দিয়ে স্বেচ্ছায় পরিকল্পনা করে মিথ্যা ও ভুয়া সীমানা জটিলতা মামলা এবং পরে ওয়ার্ড ভিভাজন চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টে মামলা করান। এতে আটতে যায় মোংলা পৌরসভার নির্বাচন। বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্টের মামলা খারিজ হয়েছে। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড সীমানা জটিলতা নিরসন করে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরপর ওয়ার্ডে ভোটার কম বেশী সংক্রান্ত অভিযোগের নিষ্পত্তি করে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন গেজেট প্রকাশ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। কিন্তু দেড় মাসেও ওই গেজেট নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়নি। ফলে নির্বাচন কমিশন ওই পৌরসভার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি।
আবেদনে আরো বলা হয়েছে, মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ও মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে নির্বাচন কার্যক্রম আটকে রাখা হয়েছে। আর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। পৌরসভার ক্ষমতায় বিএনপি নেতারা থাকায় উন্নয়নও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এনিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের মতো কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অগ্রগতির ছোঁয়া জনগণের মাঝে পৌছে দিতে মোংলা পোর্ট পৌরসভায় দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে ওই আবেদনে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং
Be the first to comment on "মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ : মোংলা পৌরসভার নির্বাচন ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে"