সর্বশেষ

ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি

ঢাকা : সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে অন্যতম ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক কর্মকাণ্ডে ঋষি সম্প্রদায়ের অধিক অংশগ্রহণের ব্যবস্থা রাখাসহ পাঁচটি সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় এ আহ্বান জানান তারা। গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থা (জিবিএসএস) আয়োজিত ‘ঋষি সম্প্রদায়ের প্রস্তাবিত টেকসই উন্নয়ন রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ঋষি পঞ্চায়েত কমিটি ও বিভিন্ন অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য প্রকৌশলী ড. মাসুদা সিদ্দিক রোজী। জিবিএসএস’র নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্নার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তৃতা করেন কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চীফ অব পার্টি ক্যাটি ক্রোক, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সানইয়াত, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব তারিক হোসেন, কাপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুব হক, বারসিকের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, এডাবের গবেষণা কর্মকর্তা এস এম সেলিম, সাংবাদিক সীমান্ত সিরাজ, হরিজন সম্প্রদায়ের নেতা কৃষ্ণ লাল, পঞ্চায়েত কমিটির নেতা মহেন্দ্র দাস, ঋষি সম্প্রদায়ের নেতা সুজন দাস প্রমূখ।

কর্মশালায় সংসদ সদস্য মাসুদা সিদ্দিক রোজী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সকল নাগরিকের সমান অধিকার প্রদানে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্যদের মতোই ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষও সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাবে। তাদের সন্তানেরা যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাবে। যোগ্যতা অনুসারে যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ পাবে। সেই লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রান্তিক মানুষের জন্য কাজ করছে। এই কাজে সরকারের পাশাপাশি অন্যান্যদের এগিয়ে আসতে হবে। কর্মশালায় উত্থাপিত সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে নিপীড়ন এবং শোষণ ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতা দাবি করার মতো দক্ষতা এবং জ্ঞানের অভাবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাসহ নানা কারণে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে দারিদ্র্যের মধ্যে তাঁদের বসবাস করতে হচ্ছে। ঢাকা শহর এবং আশপাশের ২৬টি এলাকায় প্রায় তিন লাখ ঋষি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। যাদের অধিকাংশই দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। জন্মপরিচয়ের কারণে তাদের বেশির ভাগই আদি পেশা জুতা তৈরি বা জুতা সেলাইয়ের সঙ্গে জড়িত। এই সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার বিশেষত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সুপেয় পানি, নিরাপদ আবাসন, কর্মসংস্থান এবং বিভিন্ন ভাতা সুবিধার মতো পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। বছরের পর বছর রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচনের প্রার্থীরা সংখ্যালঘু কমিশনের মতো আইন এবং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার ও উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ৯ জুলাই ২০২৪ ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "ঋষি সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*