ঢাকা : বাংলাদেশ উর্দুভাষী অধিকার আন্দোলন’ নামে নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সংগঠনটির পক্ষ থেকে ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদের মর্যাদাপূর্ণ পুনর্বাসন নিশ্চিত করাসহ আট দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
উর্দুভাষী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি মাজিদ ইকবালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংগঠক সুজিত চৌধুরী, ইউএসপিওয়াইআরএম-এর সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু, ব্লাস্টের প্রতিনিধি আহমেদ ইব্রাহিম, রিবের আইনজীবী রুহি নাজ, এএলআরডির আইনজীবী রফিক আহমেদ সিরাজী প্রমুখ। সভায় সংগঠনটির ঘোষণাপত্র ও দাবিনামা তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মেহনাজ আক্তার।
এ সময় উর্দুভাষীদের মর্যাদাপূর্ণ পুনর্বাসন ছাড়াও দাবিনামায় বলা হয়, পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত কোনো ক্যাম্প উচ্ছেদ করা যাবে না। ক্যাম্পে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি চাকরি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর অভিগম্যতার ব্যবস্থা করতে হবে। নিরাপদ খাবার পানির ও স্বাস্থ্যকর পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পের জনাকীর্ণ, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ থেকে পরিত্রাণের দিতে হবে। ক্যাম্পে বসবাসরত উর্দুভাষীদের সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। সরকারিভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থা করে চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে হবে। সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন করে ক্যাম্পে বিশেষ ও উপযোগী শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
উর্দুভাষী অধিকার আন্দোলনের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সালে মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসরত সব উর্দুভাষী বাংলাদেশি বাংলাদেশের নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হয়। ওই রায়ের ভিত্তিতে উর্দুভাষী জনগোষ্ঠী তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র এবং সুনাগরিক হিসেবে ভোটাধিকারের অধিকার পায় এবং সে ভোটাধিকার তারা স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োগ করে আসছে। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের ৯টি জেলায় ১১৬টি ক্যাম্পে আধুনিক সব মৌলিক মানবিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে তিন লাখ উর্দুভাষী। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও তাদের পুনর্বাসন না করার কারণে তারা ক্যাম্পে এক মানবেতর জীবনযাপন করছে। ক্যাম্পের পরিধি অল্প বাড়লেও এখানে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে ছোট একটা রুমের ভেতর বাস করতে হচ্ছে কয়েক প্রজন্মকে।
সভায় অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর অধিকার অবজ্ঞা করে দেশে বৈষম্যহীন সমাজ গড়া সম্ভব না। সংবিধানের প্রতিশ্রুতি হলো শোভন জীবনযাপন নিশ্চিত করা, যা থেকে উর্দুভাষীরা বঞ্চিত। তিনি বলেন, বাঙালি-বিহারি বিভাজন সৃষ্টি করে লুটপাটের কৌশল তৈরি করেছে শাষকগোষ্ঠী, যার নির্মম শিকার উর্দুভাষীরা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারও বিহারি জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করেছে, যার চূড়ান্ত পরিণতি আমরা দেখেছি একাত্তর সালে। সেই শিক্ষার আলোকে তাদের বঞ্চনা ও বৈষম্য নিরসনে আমাদের নতুন পদক্ষেপ নিতে হবে।
###
পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ১৯ মে ২০২৫ ইং
Be the first to comment on "উর্দুভাষীদের মর্যাদাপূর্ণ পুনর্বাসন নিশ্চিত করাসহ ৮দফা দাবি উত্থাপন"