সর্বশেষ

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি ডেপুটি স্পিকারের

ঢাকা: জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের চেয়ে ভালো ভাষণ বিশ্বের কোন নেতাই দিতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব দরবারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণে মর্যাদায় স্থান করে নিয়েছে। এই ভাষণ এখন বিশ্ব ইতিহাসের অংশ। সেই ৭ মার্চের ভাষণকে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান তিনি।
আজ বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক নেতা ও রাষ্ট্রপ্রধান ভালো ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু তাদের সকলের ভাষণ ছিলো লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিলো অলিখিত। ভাষণ শুনে মনে হয়েছে, টেপরেকর্ডার বাজানো হচ্ছে। অত্যন্ত সাবলিল ভাষায় দৃঢতার সঙ্গে ওই অলিখিত ভাষণ তিনি দিয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, ৫০ বছর আগের ওই ভাষণের আবেদন এখনো ফুরিয়ে যায়নি। এখনো সেই ভাষণ বাজালেই হাজারো বাঙ্গালী জড়ো হয়। ১৯ মিনিটের ভাষণ নিয়ে অনেক গবেষণাও হয়েছে। এই ভাষণটি নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন ডেপুটি স্পিকার বলেন, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে সুভাস বসু বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও- আমি তোমাদের স্বাধীনতা দিবো’। আর বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, তখন আরো দেবো- তবু দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ’। এটাই বঙ্গবন্ধু, বাঙ্গালীর মুক্তির জন্য তিনি সবসময় জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু রক্ত দিয়ে আমাদের ঋণী করেগেছেন। তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সেই ঋণ শোক করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া জাতির পিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানব জাতি নিয়ে আমি ভাবি, একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পৃক্ত তাই আমাকে গভীরভাব ভাবায়। এ নিরন্তন সম্পৃক্তের উষ্মভালবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা একজন মহামানব। তিনি শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের শোষিত নির্যাতিত মানুষের মহাননেতা। এমন মানবতাবাদী দেশপ্রেমী নেতা কালভাদ্রে জন্মগ্রহণ করেন। তারই নেতৃত্বের বিশালত্বের বর্ণনা দিতে গিয়ে ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি শেখ মুজিবকে দেখেছি’। ক্যাস্ত্রো বলেছিলেন ৭ মার্চের ভাষণ শুধু একটি ভাষণ নয়, এটি একটি অনন্য রনকৌশল দলিল। নেলসেন ম্যান্ডেলা বলেছেন, ৭ মার্চের ভাষণ আসলে ছিল স্বাধীনতার মূল দলিল। তাইতো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব দরবারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণে মর্যাদায় স্থান করে নিয়েছে। এই ভাষণ এখন বিশ্ব ইতিহাসের অংশ। এই ভাষণ অমর অক্ষয়, অবিনাশি মুক্তির বাণি। যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে, ততদিন ৭ মার্চের ভাষণ চিরঞ্জব হয়ে থাকবে।
ডেপুটি স্পিকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার সমস্ত জীবন মানুষের অধিকার আদায়ে উৎসর্গ করেছেন। জীবনের সোনালী সময় কারাবরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু একটি স্বচ্ছ সুন্দর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চেয়েছিলেন ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে বলেছিলেন দেশকে রক্ষা কর, দেশকে বাঁচাও, মানুষকে বাঁচাও, মানুষের দু:খ দূর কর, আর দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর চোরাকারবারীদের উৎখাত কর। তিনি আরো বলেন, বেদনার সাথে বলতে হয় যে মহান নেতা এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে জীবনের বেশিরভাগ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়েছেন, সেই অবিসংবাদিত নেতাকে এদেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি হত্যা করা হয়েছে জাতিসত্তাকে, আর সেই পাপিষ্ট বিশ্বাস ঘাতকদের পাপের ফল ভোগ করেছে, বাঙালি জাতি দীর্ঘ ২১ বছর। জাতির পিতা অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পন্ন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সোনার বাংলা গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে সহযোগিতার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ১১ নভেম্বর ২০২০ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শিক্ষা পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি ডেপুটি স্পিকারের"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*