সর্বশেষ

জলবায়ু বাজেটে পরিচালনা ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ এনসিসিবি’র

ঢাকা : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে নেটওয়ার্ক অন কাইমেট চেঞ্জ ইন বাংলাদেশ (এনসিসি’বি)। সংগঠনের পক্ষ থেকে জলবায়ু বাজেটে পরিচালনা ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষ করে দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের জন্য বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জলবায়ু বাজেট ২০২১-২২ বিষয়ে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা ও ভাবনা তুলে ধরতে ‘জীবন ও জীবিকার অগ্রাধিকার ঃ ন্যায্যতা ও সুশাসন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন এনসিসিবি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক (রিসার্চ এন্ড এ্যাডভোকেসি) ড. মুহাম্মদ ফররুখ রহমান। বক্তৃতা করেন ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিষ্ট ফোরামের (বিসিসিজেএফ) সভাপতি কাওসার রহমান, সুন্দরবন ও উপকুল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, সেভ দ্যা চিলড্রেনের সিনিয়র অফিসার (জলবায়ু পরিবর্তন) মোজাম্মেল হক, এনসিসি’বির রিসার্চ এন্ড এ্যাডভোকেসি এ্যাসোসিয়েট প্রতীতি কামাল প্রমূখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গৃহীত বেশির ভাগ জলবায়ু প্রকল্পগুলো ‘জনগণের জন্য’ প্রণীত হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা ‘প্রকৃত জনগণ সম্পৃক্ত’ হয়ে উঠে না। তাই জলবায়ু প্রকল্পগুলোতে ‘স্থানীয় প্রভাবসমূহকে’ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এবং ‘স্থানীয় অগ্রাধিকার’ নির্ধারণের মাধ্যমে সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বিপন্ন জনগোষ্ঠী বিশেষত নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ, ও শিশুর জন্য চাহিদা মাফিক প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।

আরও বলা হয়, জলবায়ু বাজেটের পরিচালন ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন খাতে প্রতিবছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। জলবায়ু অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহে প্রয়োজনে বিদ্যুত-গ্যাস-পানির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, দূষণকারী যানবাহন, বিমান ভ্রমণ ও বিমানে মালামাল পরিবহনের ওপর ‘সবুজকর’ আরোপ করতে হবে। এই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ব্যয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবর্তিত ‘বাংলাদেশে ক্লাইমেট ফিসক্যাল ফ্রেমওর্য়াক’ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিটি বিভাগের জন্য পৃথক ‘স্থানীয় (জেলা ভিত্তিক) ক্লাইমেট ফিসক্যাল ফ্রেমওর্য়াক’ তৈরি করতে হবে। জাতীয় জলবায়ু কমিশনের আওতায় জলবায়ু অর্থায়নকে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বিতকরা যেতে পারে।

সূচনা বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ ফররুখ রহমান বলেন, করোনা মহামারির প্রার্দুভাবে জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলা জটিলতর হয়ে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সক্রিয় জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজের সূদৃঢ় অবস্থান থাকা স্বত্ত্বেও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। এমনকি জলবায়ু কার্যক্রমে তাদের কার্যকরি অংশগ্রহণের বিষয়গুলি এখনো অমীমাংশিত রয়েছে। সরকারকে এ বিষয়ে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। তিনি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য অবিলম্বে বিশেষ কর্মসূচী চালুর দাবি জানান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে একটি আইনী বিধি বিধান তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করার পরামর্শ দেন।

বিসিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমান বলেন, পরিবেশ দিবসের সময় বর্তমান বাজেট উপস্থাপিত হলেও পরিবেশ নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তা খুবই হতাশাজনক। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেটের অর্থ বিগত বছরগুলো থেকে তুলনামূলক কমেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট খরচের কর্মদক্ষতাও অনেক কমেছে। কর্মদক্ষতা বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলেই উপকূলীয় অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই অবহেলিত উপকূলীয় অঞ্চল নিয়ে দ্রুত কাজ না করা হলে সরকারের এই শত শত উন্নয়ন সাগরে পানিতে ডুবে যাবে। এতে বাংলাদেশের অর্থ সামাজিক ক্ষতির সাথে জনজীবন বিপর্যস্ত হবে।

উন্নয়ন কর্মী মোজাম্মেল হক ঘোষিত বাজেটে বিপন্ন জনগোষ্ঠী বিশেষত শিশু, নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় শিশু, নারী, তরুন জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্তা বৃদ্ধি করতে হবে। অনুসরণযোগ্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
###

পার্লামেন্টনিউজবিডি.কম, ১৮ জুন ২০২১ ইং

Print Friendly, PDF & Email
শেয়ার করতে ক্লিক করুন

Be the first to comment on "জলবায়ু বাজেটে পরিচালনা ব্যয় কমিয়ে উন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সুপারিশ এনসিসিবি’র"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*